বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ চীনের প্ররোচনায় পা দিয়ে ক্রমশ তাদের হাতের পুতুলে পরিণত হচ্ছে নেপালের কমিউনিস্ট সরকার কেপি শর্মা ওলি । দীর্ঘদিনের বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের সাথে ফের বিরোধিতার পথে হেঁটে ভারতীয় নিউজ চ্যানেলগুলির সম্প্রচার বন্ধ করল নেপাল। সে দেশের Multi-System Operators-দের (MSO) এই সিদ্ধান্তে বৃহস্পতিবার, অর্থাত্ আজ থেকেই দুরদর্শন ছাড়া নেপালের জনগন অন্য কোন চ্যানেল দেখতে পারবে না ।
কেন ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের চ্যানেলগুলি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নেপাল ! জানা গেছে নেপালের সম্প্রচারসেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলির অভিযোগ, ভারতীয় নিউজ চ্যানেলগুলিতে তাঁদের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে। চিনের সঙ্গে ওলির সম্পর্ক নিয়ে বিভ্রান্তিকর খবর পরিবেশন করছে ভারতীয় চ্যানেলগুলি। নেপালের সরকার বিরোধী প্রচার রুখতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । উল্লেখ্য চীনেও সরকারীভাবে চ্যানেলগুলির উপর নিয়ন্ত্রন করা হয় এভাবে ।
ভারতের বিরুদ্ধাচরণ করার জন্য ইতিমধ্যে নেপালের কমিউনিস্ট প্রধান মন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগ ধিরে ধিরে জোরাল হচ্ছে । নিজের টলমল গদি বাচানর জন্য ফের চীনের মত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে সে দেশের সরকার । সম্প্রতি, নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারির সঙ্গে গোপনে বৈঠক করেছেন চিনের রাষ্ট্রদূত হউ ইয়ানকি। শুধু তাই নয়, দেশের শাসকদল ‘নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি’র অন্যতম শীর্ষনেতা মাধব কুমার নেপাল-সহ একাধিক শীর্ষস্তরের আমলার সঙ্গেও আলোচনা চালিয়েছেন চিনা রাষ্ট্রদূত। বিশ্লেষকদের মতে, প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির মসনদ বাঁচাতেই আসরে নেমেছে চিন। নেপালের শাসকদলের মধ্যে কলহ মিটিয়ে ‘চিনপন্থী’ ওলিকেই আসনে রাখতে মরিয়া চিন।
এদিকে ভারতের সাথে বিরোধিতার মাসুল গুনতে শুরু করেছে প্রতিবেশী এই ছোট্ট দেশটি । এই মুহূর্তে জাতীয়তাবাদের এককালের বন্ধু থেকে বর্তমানের বিক্ষুব্ধ শিবিরের প্রধান সেনাপতি পুষ্পকমল দাহাল ওরফে প্রচণ্ডের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে ওলির ।অন্য দিকে ওলি হুশিয়ারি দিয়েছেন, ইস্তফা দিতে হলে শাসক দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টিকে (NCP) দু’টুকরো করে ফেলার ।
শুধু ভারতীয় সংবাদ চ্যানেলগুলি নয়, ওলি নিজের গদি টিকিয়ে রাখতে আরও একটা চেষ্টা চালিয়েছেন । সূত্রের খবর, দেশে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারি করতে চাইছেন ওলি। এই নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকও করেছেন তিনি। করোনা পরিস্থিতির কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে দেশে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারির অনুমোদন চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ওলির ছক আঁচ করেই সেই প্রস্তাব নাকোচ করে দেন রাষ্ট্রপতি বিডি ভান্ডারি। তিনি উল্টে ওলিকে বলেছেন স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারি না করে নিজের দলের লোকেদের সঙ্গে বিবাদ মেটানোয় যেন উদ্যোগী হন।আর এই পরিস্থিতিতেই ফের দিল্লির সঙ্গে সংঘাত বাড়ানোর নতুন বিতর্ক তৈরি করলেন ওলি।
ভারতের সাথে চীনের সীমান্ত নিয়ে বিরোধের মধ্যে নেপাল একের পর এক ভারত বিরোধী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে । নেপাল সরকারের এই সিদ্ধান্তের পিছনে চীনের হাত আছে বলে অনেকেই ধারনা করছেন । কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিনের হাতের পুতুল ওলি ভারত বিরোধিতায় নেমেছেন, সেই বিষয়টিও স্পষ্ট।তবে নেপালের বিরুদ্ধে ভারত থেকে এখনও পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ।