বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: এতখানি আবেগ ইতিপূর্বে কখনও দেখা যায়নি যতখানি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে চন্দ্র যান -২ এর ক্ষেত্রে । একটু আগেই ইসরো থেকে ঘোষণা করা হয়েছে চাঁদের বুকে বিক্রম অক্ষত আছে । ল্যাণ্ডার বিক্রমের খোঁজ পেয়েছে ইসরো । যদিও এখনও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি । তবু যেন নিথর শরীরে হৃদস্পন্দন পাওয়ার আনন্দ। ল্যাণ্ডার বিক্রমের পুনরায় খোঁজ মেলার পর, টিম চন্দ্রযানে খোঁজ মিলল আরও এক বাঙালির। চন্দ্রকান্ত কুমারের পর বিজয় কুমার দাই । বিজয় কুমার দাই-এর বাড়ি  হুগলির বীরভূমের মল্লারপুর । চন্দ্রযান-২- মানেই এখন ভারতবাসীর গর্ব, ভারতবাসীর সৃষ্টি করা ইতিহাস । আর এই ইতিহাস সৃষ্টির পথিক হিসাবে চন্দ্রকান্ত কুমারের পর আরও একজন বাঙালী বিজ্ঞানীর নাম পাওয়া গেল । সুতরাং আপামর বাঙালী হিসাবে গর্বে বুকের সিনা মনে হয় আরও কিছুটা ফুলে উঠবে ।

চন্দ্র যান -২ বাহিনীতে অপ্র একজন বাঙালী বিজয়ের বাড়ি  মল্লারপুর থানার অন্তর্গত দক্ষিণ গ্রামে । পড়াশুনায় অত্যন্ত মেধাবী বিজয় কুমার ১৯৮৪ সালের ২ মে বীরভূমের দক্ষিণ গ্রামে এক দরিদ্র চাষি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । বর্তমানে কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা । বাবা নারায়ন চন্দ্র দাই একজন চাষি হিসাবে এখনও কর্মরত । তিনি আবার প্রমান করে দিলেন বাংলার ঘরে ঘরে সোনার ছেলের অভাব নেই ।  গ্রামের স্কুলেই বিজয়ের পড়াশোনা । ছোট থেকেই মেধাবী । তাঁর পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, বিজয় যখন ক্লাস এইটের ছাত্র, স্কুলের মাস্টারমশাইরা তাঁকে পাঠাতেন ক্লাস সিক্স-সেভেনের ক্লাস নিতে ।  গ্রামের স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর তিনি ভর্তি হন বেলুড় মঠ রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরে । তারপর কল্যাণী সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে পাশ করার পর যাদবপুর ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি শেষ করেন ।  অ্যারোস্পেস পরীক্ষায় পাশ করার পর ২০০৭ সালে ইসরোয় যোগ দেন বিজয় ।  তাঁর পড়াশোনার বিষয় ছিল ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন । চন্দ্র যান -২ তে  অর্বিটার কন্ট্রোলের যে টিম রয়েছে, তার অন্যতম সদস্য বীরভূমের বিজয়।

বিজয় কুমার দাই-এর ভাই বাপি দাই বলেন, “অভাবের সঙ্গে লড়াই করেই আমরা বড় হয়েছি। আমার দাদা ছোট থেকেই জিনিয়াস। আমরা জানতাম ও একদিন সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছবে। আজ দেশকে গর্বিত করছে। এটাই আমাদের আনন্দ।”    

আরও একজন বাঙালি জড়িয়ে আছেন এই ঐতিহাসিক চাঁদ অভিযানে – এ কথা জানার পর যারপরনাই খুশি বাংলার লোকজন ।  শুক্রবার গভীর রাতে তখন গোটা দেশের চোখ বেঙ্গালুরুর শ্রীহরিকোটায় ইসরোর সদর দফতরে। অপেক্ষার প্রহর গোনা। এই বুঝি ঘোষণা হল, ‘চাঁদের মাটি ছুঁল ল্যাণ্ডার বিক্রম। কিন্তু তা হয়নি। বিষাদ নামিয়ে ইসরোর কন্ট্রোল রুম ঘোষণা করেছিল, ‘নো সিগনাল।’ তারপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জড়িয়ে ধরে ইসরো চেয়ারম্যানের কান্না, মোদীর জাতির উদ্দেশে ভাষণে হার না মেনে এগিয়ে চলার বার্তার পর রবিবার দুপুরে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ । আজ আবার ইসরো থেকে জানান হল বিক্রম অক্ষত আছে ।

Kajal Paul is one of the Co-Founder and writer at BongDunia. He has previously worked with some publishers and also with some organizations. He has completed Graduation on Political Science from Calcutta University and also has experience in News Media Industry.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.