থমথমপুর – এন.কে.মণ্ডল (ষষ্ঠ পর্ব )
এন.কে.মণ্ডলের পরিচিতিঃ- কবি এন.কে.মণ্ডল একজন ভারতীয় বাঙ্গালী কবি ও লেখক। তিনি পশ্চিম্বঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার প্রতাপপুর গ্রামে ৫ ই মে ১৯৯৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি রুকুনপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এইচ এস সি পাশ করেন। স্থানীয় হাজী এ.কে. খান কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন /
হ্যাঁ চল। খানিকটা দূরে গিয়ে বসল একটি মোটা গাছের নিচে। তখন বলে স্বপ্না,
স্বপ্না: আচ্ছা তুমি বাড়ি চলে যাবে তখন আমি কি করব ?
ফাহিম: আরে আমি তো এখানে আর থাকতে আসি নি, বেড়াতে এসেছি, তাই না ? আর তাছাড়া মোবাইল তো আছে, ভিডিও চ্যাট করব, কথা বলব, অসুবিধে আছে নাকি?
স্বপ্না: তুমি চলে গেলে আমি কি নিয়ে থাকব সেটা ভাবলেই মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
ফাহিম: তাহলে আমার মনে হয় রিলেশন করাটা ভুলই হয়েছে।তুমি ভাবছো নিজের টা। আরে তোমার মনে হচ্ছে, তা আমারও তো হচ্ছ্ তাই না ?
স্বপ্না: যাই হোক তুমি আমায় কখনো ছেড়ে যাবে না আমার জীবন থেকে, কথা দাও।
ফাহিম: আমি কসম করছি যে, তোমায় আমার জীবন থেকে কখনো যাব না ।কিন্তু যদি তোমার বেলায় হয় ?
স্বপ্না: আমার কখনো হবে না।
ফাহিম: বেশ না হলেই ভালো।
দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে নিজেরদের সম্পর্কের স্থায়িত্বটা বজায় রাখার জন্য।হালকা শরীরে কামুকতা আসলেও তা দুজনেই মানিয়ে নেই।গল্প অনেক্ক্ষণ করার পরে সুমনকে কল দিয়ে বলে, তোরা কোথায় আছিস?
সুমন বলে, আমরা পার্কের অপজিশন সাইটে আছি। তোরা চলে আয়।
-ঠিক আছে আসছি। এইবলে এক জায়গায় মিলিত হয়ে বাড়ি ফিরে।
তবে স্বপ্নার মুখে বেশ আনন্দ। ফ্রি ফ্রি মহুর্ত মনে হচ্ছে। কেন না আজ দুজন দুজনেই ভালোবাসে এবং তা পরিস্কার হয়ে গেছে। যাই হোক ফাহিম স্বপ্নাকে গুড নাইট বলে বিদায় দেয়।তবে স্বপ্নাও পাল্টা গুড নাইট জানায়।ফের পরের দিন সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে ওয়াসরুম সেরে নাস্তা করে বেড়াতে যাওয়ার জন্য বেরবে, এমন সময় মেসো ডাক দে্ শোনো তোমরা।
রিয়া উত্তর দেয়, কি হল মেসো মশাই?
মেসো বলে, তোমাদের কোনো অসুবিধে হচ্ছে না তো মা?
-না মেসো আমাদের কোনো।অসুবিধে হচ্ছে না।
-তো আজ কোথাও বেরবে না।
-দেখা যাক কি করে সবাই।
-ঠিক আছে যাও। যদি কোনো অসুবিধে হয় তবে আমায় ইনফর্ম করবে কেমন।
-ঠিক আছে মেসো মশাই।
নয়না বলে, আজ সকালে কোথাও যাবি নাকি?
সুমন উত্তর দেয়, যাব না মানে, কি বলিস? এখানে কি আমরা ঘুমাতে এসেছি?
তারপর হঠাৎ সন্তু ডাক দেয়, এই তোরা কোথায় ? রেডি হয়ে নে চটজলদি।
নয়না বলে, এই তো বেলা দশটা বাজে ।এখনি যাবি ? আজ না হয় বিকেলে যাব, হবে না?
সুমন উত্তর দেয়, হ্যাঁ, তুই বাড়িতে বসে ভ্যারেন্ডা ভাজ, আমরা আসি কেমন?
-না না আমিও যেতে চাই।
-তবে তাড়াতাড়ি আয়।
কিছুক্ষণ পরে সবাই বেরিয়ে যাচ্ছে, এমন সময় স্বপ্নাকে তাদের গেটের মুখে দেখতেই বলে, হাই স্বপ্না।
স্বপ্না পাল্টা জবাব দেয়, হেলো এন্ড হাও আর ইউ?
-আই এম ফাইন এন্ড ইউ?
-শেম টু। তো কোথায় যাচ্ছো আমায় না জানিয়ে?
-না, মানে একটু ঘুরতে।
-আমাকে একবারটিও জানানোর প্রয়োজন মনে করলে না তুমি?
-না, মানে!
-আর বলতে হবে না। আমিও যেতে চাই।
-যাবে, তো চল । কি আর বলব?
উঠে এগোতে থাকে থমথম পার্কের দিকে।এটা সেই পার্ক যেখানে থমথমপুরের স্মৃতি জড়িয়ে। পার্কে প্রবেশ করার জন্য টিকিট প্রয়োজন হয় প্রচুর মুল্য দিয়ে। যাই হোক টিকিট কেটে প্রবেশ করল । প্রথমেই নজর পড়ল নয়না ও সন্তুর। যে নদীর পাড়ে সুন্দর সুন্দর ফুলের বাগান এবং কি মনোরম পরিবেশ যা দেখে মুগ্ধতায় মন ভরে যায় নয়না ও সন্তুর। তাই ওরা ওখানে যেতে চায় । তাই সবাইকে বলল, আপন আপন নিজের মতো করে ঘুরে ঘুরে দেখ। আর ঠিক বারোটার দিকে ফিরতে হবে। আর তাছাড়া মোবাইল তো আছেই যোগাযোগ হবেই।
-ঠিক আছে তোমরা বেড়াও কেমন।
ফাহিম আর স্বপ্না চলে গেল একদিকে, রিয়া আর সুমন চলে গেল একদিকে। দুজন দুজন করে আলাদা আলাদা হয়ে গেলো।নয়না বাগানের দিকে যেতেই একটা ফুল ছিড়তে যাবে এমন সময় নয়নার দিকে ধেয়ে আসছে একটি মৌমাছি আর ভয়ে একেবারে আছাড় খেয়ে পড়ে সন্তুর গায়ে। ব্যাচারা সন্তু পড়বি তো পড় মুখে মুখ লাগিয়ে।কি বিচ্ছিড়ি কান্ড। কেউ আর কথা বলে না, একটা যেন লজ্জা লজ্জা ভাব। তাকাতেই পারে না দুজন দুজনে। চোখে চোখে কথা হচ্ছ্ কিন্তু তা মুখে পরিস্কার হচ্ছে না। পাশের মানুষগুলি পড়ে যাওয়ার পর বলে, প্রেম পিরিতি করতে গেলে নায়ক নায়িকার মত এক আধটু ওরকম পড়া লাগে।তাতে কোনো যায় আসে না।
সন্তুর কিছু মনে না হলেও নয়নার মনে পিরিতির ফুল ফুটছে ।