একজন মানুষের জীবন আর মৃত্যুর মাঝামাঝি সময় একটা সূক্ষ্ম সুতোর উপর ঝুলছে । ঠিক সে সময় দেবদূতের মতো হাজির হয়েছিলেন প্রাক্তন সলিসিটর জেনারেল হরিশ সালভে । গতকাল থেকে কুলভুষণ এর ফাঁসি স্থগিত করা হয়েছে । এরপর প্রকাশ্যে চলে আসে হরিশ সালভের  অবদানের কথা ।

ঘটনাটা ছিল 2017 সালের 15 ই মে । কুলভুষণ জাধবকে  “র” -এর গুপ্তচর সন্দেহে গ্রেপ্তার করেছে পাকিস্তান ।  পাক সেনা আদালত ফাঁসির সাজা দিয়ে  ফেলেছে । কিন্তু এভাবে তো ফাঁসির সাজা দেওয়া যায় না ! সেই সাজার বিরুদ্ধে যে আবেদন করা হয়,  সেটার শুনানি হয় আন্তর্জাতিক আদালতে। কিন্তু সেই সময় আন্তর্জাতিক আদালতের অধিবেশন চলছে না । যার কারণে তিন দিন সময় পিছিয়ে  দেওয়া হয় শুনানির ।

এর মধ্যেই যদি পাকিস্তান ইচ্ছা করত,  তাহলে কুলভুষণ জাধব কে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিতে পারত । কিন্তু বাস্তবে সেটা হয়নি । সেটা হয়নি একমাত্র কুলভুষণ জাধব এর কাছে দেবদূত তুল্য  প্রাক্তন সলিসিটর জেনারেল হরিশ সালভে এর কারণে । অবাক করার বিষয় হলেও এটাই সত্যি,  আন্তর্জাতিক আদালতে হরিশ সালভেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত করা হয়েছে । দুর্ধর্ষ চাটার  একাউন্টেন্ট হরিশ সালভের এক এক  বারের অ্যাপিয়ারেন্স ফি 6 লক্ষ থেকে 15 লক্ষ টাকার মধ্যে ।

এ বিষয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে ।  কিন্তু তখন মুখ খুলেছিলেন তৎকালীন বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ । তিনি টুইটারে জানান,  মাত্র এক টাকার বিনিময়ে কুলভূষণ এর মামলা লড়ছেন সালভে ।   অতীতে এবং বর্তমানে শুনানি চলাকালীন পাক আদালতের  “বিচারের প্রহসনকে”  পদে পদে বাধা দিচ্ছেন এই দুঁদে  আইনজীবী । আজ কুলভুষণ যুদ্ধজয়ের নেপথ্য নায়ককে সারাদেশ শুভেচ্ছা বার্তা জানাচ্ছে । অবশ্য সালভা  নিজে বলেছেন,  ” এই দিনে তিনি নিজে তৃপ্ত”  ।

2017 সালের সেই দিনটিতে ঠিক কী ঘটেছিল ? কি করেছিলেন সালভে  ? “কুলভুষণ জাধব কে খুব শিগগিরই ফাঁসিতে ঝুলাতে চলেছে পাকিস্তান সরকার”  সেই খবর  সালভের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় । আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের এই  প্রতিনিধি বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে সোজা হাজির হয়েছিলেন আন্তর্জাতিক আদালতের রেজিস্ট্রারের কাছে । দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে মোড় ঘোরানো এই মামলার গুরুত্ব তাকে বোঝাতে মাত্র কুড়ি মিনিট সময় লেগেছিল ।  আর তার ফল তিনদিন পরে শুনানি শুরুর আগে অব্দি কুলভুষণ জাধব এর ফাঁসি স্থগিত করে দেওয়া হয়েছিল ।

কথায়  কথায় পাকিস্তান ক্রমাগত ভিয়েনা কনভেনশন ভেঙেছে । ভারতীয় দূতাবাসের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি । তার জীবন একটা সুতো ঝুলছে,  এটাই বুঝিয়েছিলাম রেজিস্ট্রার কে তিনি । সঙ্গে সঙ্গে রেজিস্ট্রার বিষয়টি আন্তর্জাতিক আদালতের প্রেসিডেন্টের নজরে  আনেন । সেখান থেকেই পাক  প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয় ভারতের আবেদন নিয়ে শুনানি না অব্দি যাদবের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে পারবে না পাকিস্তান ।

Kajal Paul is one of the Co-Founder and writer at BongDunia. He has previously worked with some publishers and also with some organizations. He has completed Graduation on Political Science from Calcutta University and also has experience in News Media Industry.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.