বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ যাদবপুরে এবিভিপি এর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে যাদবপুরের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে হেনস্তা হন লোকসভা বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয় এবং ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পাল । সেই ঘটনার পর থেকে সারা রাজ্য জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে । যাদবপুরে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ঘিরে যে ঘটনা ঘটেছে, প্রশাসনের গাফিলতি ছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় । এ বার সেই ঘটনায় মুখ খুললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিলীপ ঘোষ এ বিষয়ে তাঁর প্র তিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, ” এগুলো বরদাস্ত করা হবে না। যেভাবে পাকিস্তানে ঢুকে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দিয়েছি, সেভাবেই যাদবপুরে ঢুকে কমিউনিস্ট ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেব।”
বৃহস্পতিবারে ঘটে যাওয়া যাদবপুরের ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে জমায়েত হয়েছিল বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি । দুপুরবেলা রাজ্য বিজেপি অফিসে সাংবাদিক সম্মেলন করে দিলীপ ঘোষ বলেন, “রাজ্য জুড়ে অরাজকতা চলছে। ৬ ঘণ্টা ধরে একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে নিগ্রহ করা হয়েছে। বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পলকেও হেনস্থা করা হয়েছে। অথচ উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, পুলিশ সবাই চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল।” পাশাপাশি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের অবস্থান নিয়ে তাঁর প্রশংসা করেন । রাজ্যপাল সম্পর্কে তিনি বলেন, “রাজ্যপাল সেখানকার আচার্য। তাঁর অধিকার রয়েছে ব্যবস্থা নেওয়ার। উনি আইন জানেন, রাজনীতিও জানেন। যেভাবে উনি যাদবপুরে গিয়ে বাবুল সুপ্রিয়কে বের করে এনেছেন, আমরা তার প্রশংসা করছি।”
এদিকে গত বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিয়ন রুম ভাঙচুর করেছ্রেছ এবিভিপি, এমনই অভিযোগ উঠেছে। এবিষয়ে দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, “ওখানে বাইরের ছেলেরা ঢুকছে। দেশবিরোধী কাজ হচ্ছে। পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। এগুলো কোনওভাবেই আমরা বরদাস্ত করব না। যেভাবে পাকিস্তানে ঢুকে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দিয়েছি, সেভাবে যাদবপুরে ঢুকে কমিউনিস্ট ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেব। কাল ভাঙা হয়েছে। আবার ভাঙা হবে।”
যাদবপুরের ঘটনা নিয়ে শুক্রবার রাজভবনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে গিয়ে কথা বলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায় । সাথে ছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয় । রাজ্যপালের সাথে আলোচনা পর্ব সারার পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন বি জে পির রাজ্য রাজনীতির চাণক্য মুকুল রায় । মুকুল রায় বলেন, “পুরো ঘটনায় রাজ্যের গাফিলতি রয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর সুরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত পুলিশ ছিল না। এর পরেই বহিরাগত তত্ত্ব আনেন মুকুল। একটা ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, “আমরা রাজ্যপালকে এইসব ছবি দেখিয়েছি। ছবিতে বাবুল সুপ্রিয়র চুল ধরে যাকে টানতে দেখা যাচ্ছে, সেই দেবাঞ্জন চট্টোপাধ্যায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রই নয়। সে সংস্কৃত কলেজের ছাত্র। কীভাবে বাইরের ছেলেকে ঢুকিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে নিগ্রহ করা হল, তার জবাব উপাচার্যকে দিতে হবে।”
ঘটনার দিন কেন্দ্রীয় প্রতি মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নি মিত্রা পাল এবিভিপি-র নবীনবরণ উৎসব উপলক্ষ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যান । দেখায় সেখানকার ছাত্র-ছাত্রীরা বাবুল সুপ্রিয়কে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখায় এবং “গো ব্যাক” স্লোগান দেয় । সেখানে প্রায় সাত ঘণ্টা বিশ্ববিদ্যালয়েই আটকে থাকেন বাবুল সুপ্রিয় । এর মধ্যেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। ভাঙচুর হয় ইউনিয়ন রুমে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের বাইরে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ হয়। সেই সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করার জন্য রাজ্যপাল তথা যাদবপুরের আচার্য জগদীপ ধনকড় হাজির হল এবং বাবুল সুপ্রিয়কে নিজের গাড়িতে বসিয়ে বের করে নিয়ে আসেন । রাজ্যপালের গাড়ি ঘিরেও বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ দেখায় পড়ুয়ারা ।