বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্ক: ভারতের অরুণাচল প্রদেশ এমন একটা ভৌগলিক অবস্থান এ অবস্থিত, যেখান থেকে চীনের সীমান্ত খুবই কাছের । পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় রাস্তাঘাট চলাচলের পক্ষে অতীব দুর্গম । কিছুদিন আগে অরুণাচলের বিজেপি সাংসদ তাপির গাও সতর্ক করেন, সীমান্ত পেরিয়ে চাগলাগাম ও বিশিং অঞ্চলে ঢুকে পড়েছে চিনা সেনা ।গত বুধবার ভারতীয় সেনাবাহিনী সেকথা অস্বীকার করে  জানায়, সীমান্তে টহলদার বাহিনী পাঠানো হয়েছিল। তারা ভারতের অভ্যন্তরে কোনও চিনা সৈনিক দেখতে পায়নি। ভারতীয় সেনাবাহিনী অস্বীকার করলেও স্যাটেলাইট ইমেজ বলছে অন্য কথা ।উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা দেখতে পেয়েছেন, চিনা সৈনিকরা সত্যিই বিশিং অঞ্চলের উত্তরে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়েছে।সেখানে চীনা সৈন্যদের তৎপরতার প্রমান পাওয়া গেছে । সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হল, শুধু তাই নয়, লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল পেরিয়ে ভারতে ঢুকে এক কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাও বানিয়ে ফেলেছে তারা।

চীনাদের আগ্রাসন নীতি কেবলমাত্র এখনই দেখা যাচ্ছে তাই নয়, এর আগেও চীনের এহেন তৎপরতা দেখা গিয়েছিল । প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ অভিজিৎ আয়ার মিত্র বলেন, যখন সীমান্ত নিয়ে দুই দেশের বিতর্ক হয়, তখন দেখা যায়, একটি দেশ সীমানার কাছে জনবসতি তৈরি করছে। রাস্তাঘাট ও অন্যান্য পরিকাঠামো বানাচ্ছে। এর অর্থ, তারা অপর দেশকে বাধ্য করতে চায় যাতে সীমারেখা টানা হয় নতুন করে।ফলে স্যাটেলাইট চিত্র থেকে পাওয়া তথ্য থেকে নড়ে চড়ে বসেছে ভারতীয় প্রতিরক্ষা দপ্তর ।

বেশ কয়েক বছর আগে ২০১৫ সালে চিন এবং ভারতের মধ্যে আলোচনা হয় এবং চীন মেনে নিয়েছিল, লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলই হল দুই দেশের সীমান্ত ।কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে তখন চীন মেনে নিলেও সেগুলি আগ্রাহ্য করে তারা ভারতের অভ্যন্তরে এক কিলোমিটার ঢুকে পড়েছে।এছাড়া দেখা গেছে সীমান্ত থেকে ৩০০ মিটার দক্ষিণেও পরিকাঠামো তৈরি করেছে। হিসাব করলে চীনের এই মনোভাব বুঝতে অসুবিধা হবে না । কারন চীন চায়, লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলকে আরও দক্ষিণ দিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হোক।

উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ বলেন, এমপি তাপির গাও জানিয়েছিলেন, চিন ভারতের অভ্যন্তরে ঢুকে বুলডোজার দিয়ে রাস্তা তৈরি করছে।এই তথ্য পাবার পরে ভারতীয় সেনাবাহিনী অরুনাচল প্রদেশের  সীমান্তে গিয়ে কোনও বুলডোজার খুঁজে পায়নি। কিন্তু যেভাবে রাস্তা তৈরি হয়েছে তাতে বলা যায়, বুলডোজারের মতো ভারী আর্থ মুভিং যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল।প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ বলেন, চিন কোনও বাধা ছাড়াই ভারতের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়েছে। ২০১৭ সাল থেকেই তারা এদেশের অভ্যন্তরে ঢুকছে। মনে হয়, তাপির গাওয়ের বক্তব্য ঠিক। শুধু বিশিং নয়, চাগলাগাম অঞ্চলেও সম্ভবত তারা ঢুকেছে। যদিও ভারত সরকার এখনও চিনা অনুপ্রবেশ নিয়ে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এই অবস্থায় তারা আরও ভেতরে ঢুকে পড়লেও আশ্চর্যের কিছু নেই।

Kajal Paul is one of the Co-Founder and writer at BongDunia. He has previously worked with some publishers and also with some organizations. He has completed Graduation on Political Science from Calcutta University and also has experience in News Media Industry.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.