বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ আগামী সপ্তাহেই দোল। চারিদিকে যেন রঙ লেগেছে। রঙ লেগেছে আকাশে বাতাসে। বসন্ত জাগ্রত দারে। একদিকে যেমন পলাশ ফুলে আগুন লেগেছে তেমনই মানুষের মনেও লেগেছে রঙ। আর এই বসন্তের সবচেয়ে বড় উৎসব হল বসন্ত উৎসব। ছোটো হোক কিংবা বড় সকলেই যেন মেতে ওঠে বসন্ত উৎসবে। আর সেই উৎসবের একটা বিশেষ অংশ হল “ন্যাড়া পোড়া” কিংবা ” হোলিকা দহন”।
শুধু ভারতেই নয়, এই দোল উৎসব কিংবা হোলি পালিত হয় সারা বিশ্ব জুড়ে। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মহা সমারোহে পালিত হয় এই দোল উৎসব কিংবা হোলি। তবে দোল কিংবা হোলি এর আগের দিন একটা উৎসব হয়। সেটা হল বাঙালীদের কাছে “ন্যাড়া পোড়া” এবং অবাঙালীদের কাছে “হোলিকা দহন।”
তবে এই “ন্যাড়া পোড়া” বা “হোলিকা দহন” এর মাহাত্ম অনেকেরই অজানা। এটি একটি প্রথা। যে প্রথায় হোলি বা দোলের আগের দিন পোরানো হয় শুকনো কাঠ পাতা। এবং সকলে তার চারপাশে ঘুরে মনের সমস্ত পাপ জলাঞ্জলি দেয়। তবে এর নেপথ্যে আছে একটি পৌরাণিক ঘটনা।
সেখানে বলা আছে যে, রাক্ষসরাজ হিরণ্যকশিপু অমরত্ব লাভের জন্য ব্রহ্মার তপস্যা করেন। এবং তার তপস্যায় খুশি হয়ে ব্রহ্মা তাকে ৫ টি বর প্রদান করে। এই ৫ টি বর হল কোনও মানুষ কিংবা কোনও প্রাণী তাকে হত্যা করতে পারবে না। দিনে কিংবা রাতে তার মৃত্যু হবেনা। ঘরের ভেতরে কিংবা বাইরে তার মৃত্যু হবেনা। জমিতে, জলে কিংবা শুন্যে তার মৃত্যু হবে না, অস্ত্র বা শস্ত্র কোনও কিছুর দ্বারাই মৃত্যু হবেনা তার।
এই বরদানের জন্য সকলের মনে ভয় সঞ্চার হয়, কারণ ক্রমশ বাড়তে থাকে রাক্ষসরাজের অত্যাচারের মাত্রা। অন্যদিকে তার সন্তান প্রলহাদ হলেন ভগবান বিষ্ণুর ভক্ত। এটা জানার পর তিনি নিজের বোন হোলিকার সাহায্য চান প্রলহাদকে হত্যা করার জন্য। অন্যদিকে হিরণ্য কশিপু যেমন অমরত্বের বর পেয়েছিলেন ব্রহ্মার কাছ থেকে তেমনই তার বোন হোলিকা পেয়েছিলেন একটি শাল যা তার রক্ষাকবচ ছিল।
হোলিকা বলেন যে, তিনি প্রলহাদকে নিয়ে আগুনের মধ্যে গিয়ে বসবে, কিন্তু তার শাল থাকায় তার কিছু হবেনা কিন্তু প্রলহাদ পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। কিন্তু ঘটে উল্টোটা। শালটা গিয়ে পরে প্রলহাদের গায়ে ফলে বেঁচে যায় প্রলহাদ এবং পুড়ে যায় হোলিকা। ফলে দুষ্টের দমন হয় এবং শিষ্টের পালন হয়। এই মাহাত্মের কথা স্মরণে রেখেই প্রতি বছর পবিত্র দোলের দিনের আগে “ন্যাড়া পোড়া” বা “হোলিকা দহন” করে সবাই। অর্থাৎ মনের দুষ্টের দমন করে পবিত্র মনে দোল কিংবা হোলির রঙ গায়ে মাখে সবাই।