বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ আজকের ডিজিটাল যুগে আমরা এখন নিজেরাই একজন মিনি ডাক্তার । কারন জ্বর, সর্দি, কাশি, পেটখারাপ, মাথা ব্যথা, পিঠে ব্যথা বা গলা ব্যথার মতো সমস্যায় আমরা বেশীর ভাগ মানুষ এখন চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে নিজেরাই ডাক্তারি করি । আর এর জন্য তো আমাদের “গুগল বাবা” রয়েছেনই । সুতরাং একবার গুগলে সার্চ করে নিলেই হল, রোগের লক্ষণ দেখে কি মেডিসিন বা অ্যান্টিবায়োটিকের দরকার তার নাম অনায়াসেই পেয়ে যাই । কিন্তু এভাবে কিছু হলেই অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার আগামী দিনে কতখানি ভয়াবহ হয়ে দাঁড়াবে আমাদের জন্য সেটা একবার ভেবে দেখেছেন কি ?
অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার(Use of antibiotics)
এখন বারো মাসে ছয় ঋতু বলা যায় না জোর গলায় । গ্রিন হাউজ এফেক্ট হোক বা অন্য কোন কারনে সারা বছর বলতে গেলে ঠাণ্ডা বা গরম আচমকাই চলে আসছে ।যার ফলে আমরা আক্রান্ত হচ্ছি, জ্বর, সর্দি, কাশি, পেটখারাপ, মাথা ব্যথা, পিঠে ব্যথা বা গলা ব্যথার মতো সমস্যায় । কিন্তু একটা কিছু হলেই হল, আমরা ছুটি ওষুধের দোকানে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই কিনে আনি মেডিসিনের পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিক । সমীক্ষায় দেখা গেছে, উঠতি এবং কম বয়সীদের মধ্যে এ প্রবণতা সবচেয়ে বেশি । আর এতেই নিজেদের অজান্তে ডেকে আনছেন বিপদ । আমরা হয়ত সাময়িক স্বস্তির আশায় হাতের কাছে যে অ্যান্টিবায়োটিক পাচ্ছি সাধারন সমস্যাতেও সেটা ব্যবহার করছি । কিন্তু সাথে সাথে বেড়ে চলেছে মৃত্যুর ঝুঁকি। তাই সাবধান হওয়ার এখনই সময়।
আমরা সকলেই জানি, আমাদের নিজেদের শরীরে কিছু নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে । সাধারনত সামান্য সর্দিকাশি, বা মাথা ব্যাথা কিম্বা অন্য কোন অসুস্থতা আমাদের শরীরের নিজস্ব রেজিস্ট্যান্স পাওয়ারের দ্বারা ঠিক হয়ে যায় । অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে আমাদের শরীরের নিজস্ব রেজিস্ট্যান্স পাওয়ার ছাড়াও আমরা সুস্থ হয়ে উঠি । কিন্তু, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে শরীর শুধু অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হয়ে উঠছে তা নয়, ভবিষ্যতে শরীরে আর অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করবে না । ফলে সামান্য কিছু হলে আমাদের শরীরের নিজস্ব নিজস্ব রেজিস্ট্যান্স পাওয়ারের ক্ষমতা হ্রাস পাবে বা কাজ করবে না । অথচ যারা অ্যান্টিবায়োটিক খেতে শুরু করেন, তারা জানেন না যে অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াই তার অসুখ ভালো হতে পারতো । সামান্য হাঁচি-কাশিতেও মুড়ির মতো অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে ঘনিয়ে আসে বিপদ ।
অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার(Use of antibiotics)
চিকিৎসকদের দাবি, অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাবে শরীরের ভেতরের জীবাণুগুলো চরিত্র বদলাতে থাকে। তারা অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি অর্জন করে। একসময় অ্যান্টিবায়োটিক খেলেও আর জীবাণুগুলো মারা যায় না। ফলে অকালেই মৃত্যু হতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একেই বলা হয় ‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স’। অথচ প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি না করার জন্য আইনও রয়েছে। না মানলে রয়েছে শাস্তির বিধান। কিন্তু দেখার কেউ নেই।যার কারনে যে কেউ যখন তখন বাজার বা কোন মেডিসিনের দোকান থেকে অ্যান্টিবায়োটিকের নাম দিয়ে সেটা কিনতে পারে । এ কারনে অযাচিত মৃত্যু ঠেকাতে দ্রুত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার নিয়ন্ত্রন করুন এবং দরকারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ।