সংগৃহীত ছবি


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতার পর গত ৫২ বছরে আমরা যা কিছু অর্জন করেছি তা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের হাতে। গতকাল শুক্রবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাংলাদেশকে ‘অনুন্নত’ দেশ হিসেবে উন্নীত করেছেন এবং আমরা মাতৃভূমিকে ‘উন্নয়নশীল’ দেশের তালিকায় নিয়ে এসেছি। স্বাধীনতার পর গত ৫২ বছরে আমরা যা কিছু অর্জন করেছি তা জাতির পিতা ও আওয়ামী লীগের কারণে।

তিনি বলেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমাদের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ, ইনশাআল্লাহ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে জিতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায়। বিশ্বে বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার দায়িত্ব আমরা নিই।

তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চালুর মাধ্যমে দরিদ্র, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সরকারি ভাতার আওতায় আনা হয়েছে। কৃষি উৎপাদনে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেশকে খাদ্য উৎপাদনে স্বনির্ভর করে তুলছি। ভারতের সাথে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ১৯৯৬ সালে। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা ১৯৯৭ সালে একটি ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করি। ‘ক্ষতিপূরণ অধ্যাদেশ’ বাতিল করে আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার শুরু করেছি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর ১৫ বছর ধরে নিরন্তর জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। আজ আমরা জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজগুলো বাস্তবায়ন করছি। বাংলাদেশ আজ খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন আমরা পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছি।

তিনি বলেন, মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরের বিশাল এলাকার ওপর আমাদের সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের ফলে ছিটমহলবাসীর দীর্ঘদিনের অমানবিক জীবনের অবসান হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় কার্যকর হওয়ায় দুঃখ থেকে স্বস্তি পেয়েছে দেশ। জাতীয় চার নেতার হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায় কার্যকর অব্যাহত রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা 2021-2041 সময়ের জন্য ২য় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি। আমরা বিশ্বের প্রথম শতবর্ষী ‘ডেল্টা প্ল্যান 2100’ বাস্তবায়ন শুরু করেছি। বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর সুফল আজ শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামীণ পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিটি গ্রামে নগর নাগরিক সুবিধা বিস্তৃত করা হচ্ছে। দেশের সব গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের জন্য ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে আর একজন মানুষও গৃহহীন হবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। মাথাপিছু আয় 2005-06 সালে $543 থেকে বেড়ে আজ $2,765 হয়েছে। দেশের প্রতিটি সেক্টরে আমরা অবিশ্বাস্য অগ্রগতি অর্জন করেছি। কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন ‘রোল মডেল’। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে লোভনীয় ‘উন্নয়নশীল’ দেশের মর্যাদায় উন্নীত হওয়ায় জাতিসংঘ থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে জাতিরাষ্ট্র ‘বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। এই অর্জনকে অর্থবহ করতে হলে মহান মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও মুক্তিযুদ্ধের কথা সবার জানা ও বলা উচিত। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দেব- বিজয় দিবসে এটাই আমাদের অঙ্গীকার।

Nitya Sundar Jana is one of the Co-Founder and Writer at BongDunia. He has worked with mainstream media for the last 5 years. He has a degree of B.A from the West Bengal State University.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.