আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে। পরিবহন জ্বালানির পাশাপাশি শিপিং খরচও কমছে। এ কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার কমতে শুরু করেছে। কিছু দেশে এই হার নেতিবাচক পর্যায়ে নেমে গেছে বা কোনো মুদ্রাস্ফীতি নেই। অন্যদিকে খাবারের দাম কমছে। সব দেশেই মূল্যস্ফীতির হার ২ থেকে ৩ শতাংশে নেমে এসেছে, যা ছিল নাকাল। কিন্তু বাংলাদেশে এই হার বাড়ছে।
২০২১ সালের মে মাসে বাংলাদেশে খাদ্যমূল্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৪.৮৭ শতাংশ। 2022 সালের এপ্রিলে এটি বেড়ে 6.23 শতাংশ হয়েছে। ওই বছরের মে মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৩০ শতাংশে। এরপর থেকে এই হার বেড়েই চলেছে। গত এপ্রিলে বাংলাদেশে খাদ্যমূল্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.২ শতাংশ। গত তিন বছর ধরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের ওপরে রয়েছে।
সোমবার রাতে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মে মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই বিশেষ করে ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ছে। ওই সব দেশই ডবল ডিজিটের হার অতিক্রম করেছে। ওই সব দেশ ইতিমধ্যেই তা ২ থেকে ৩ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে সব পদক্ষেপ নিলেও মূল্যস্ফীতি কমছে না। উল্টো বাড়ছে। গত এপ্রিলে বাংলাদেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০.২ শতাংশ।
সে সময় সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ভুটানে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ, ভারতে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ এবং নেপালে ৫ দশমিক ২ শতাংশে নেমে আসে। অর্থনৈতিক সংকটের মুখে থাকা পাকিস্তান খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার দুই অঙ্কের নিচে নিয়ে আসতে সফল হয়েছে। বর্তমানে দেশে এ হার ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। ঋণে জর্জরিত শ্রীলঙ্কায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি ২ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। মালদ্বীপে তা 5.9 শতাংশে নেমে এসেছে। কিন্তু এ মাঠে সফল হয়নি বাংলাদেশ।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় দেশগুলিতে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কে পৌঁছেছে। এখন তা আমেরিকায় ২.২ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্যে ২.৯ শতাংশে নেমে এসেছে। অন্যান্য দেশেও এই হার কমছে। কম্বোডিয়া এপ্রিলে কোন মুদ্রাস্ফীতি দেখেনি। ইন্দোনেশিয়ায় এই হার ৭ শতাংশ, ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ, থাইল্যান্ডে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ, ব্রাজিলে ৩ দশমিক ১ শতাংশ, চীনে মাইনাস ২ দশমিক ৮ শতাংশ, মালয়েশিয়ায় ২ শতাংশ।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে এপ্রিলে এই হার কমে 10.8 শতাংশে নেমে এসেছে। জাপানে 4.3 শতাংশ, সৌদি আরবে 7.7 শতাংশ, সিঙ্গাপুরে 3 শতাংশ। অর্থনৈতিক সংকটে থাকা কিছু দেশে এই হার এখনও বেশি। তবে সেসব দেশে সরকারি কর্মকাণ্ডের কারণে মূল্যস্ফীতির চাপ ভোক্তাদের ওপর বর্তায় না। ইরানে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ২৩.১ শতাংশ এবং মায়ানমারে ৫৩.১ শতাংশ।