দেশের অধিকাংশ পশুর চামড়া রাজধানীর অদূরে সাভারের বিসিক লেদার টাউনে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এই শহরে কোরবানির চামড়া প্রবেশের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে। ঈদের দিন থেকে পরবর্তী সাত দিন শুধু কোরবানির পশুর চামড়া ঢাকা জেলায় প্রবেশ করবে। সাত দিন পর অন্য জায়গা থেকে চামড়া আসবে।
এ সময় পাইকারদের তাদের ব্যবস্থাপনায় লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করতে হয়।
চামড়া নগরীর ওপর বাড়তি চাপ এড়াতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করছেন শিল্পনগরীর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। এছাড়াও, এটি সেন্ট্রাল এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের (CETP) ক্ষমতার বেশি হওয়া উচিত নয়।
চামড়া শিল্প নগরী সাওয়ারে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ব্যস্ততা বেড়েছে। অতিরিক্ত শ্রমিকরা রাসায়নিক ও লবণ মজুদ করে কারখানা প্রস্তুত রেখেছেন। বিসিকের পক্ষ থেকেও অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গত বছর বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক কোটি পিস, তবে এ বছর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে এক কোটি পিস। চামড়ার ভালো দাম পেতে সংশ্লিষ্টদের নিয়ম অনুযায়ী চামড়া সংরক্ষণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, স্থানীয়ভাবে লবণ দিয়ে পশুর চামড়া সংরক্ষণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় ব্যবসায়ী, মাদ্রাসা, এতিমখানার প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেছে জেলা প্রশাসন।
জাতীয় সম্পদ চামড়া ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘চামড়া যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা ইউনিয়ন থেকে জেলা পর্যায় পর্যন্ত এই ব্যবস্থা নিয়েছি। এবার আমরা প্রচুর লবণ উৎপাদন করেছি, অনেক এতিমখানায় বিনামূল্যে লবণ দিয়েছি। প্রতিবারই সমস্যা দেখা দিলেও সরকার নির্ধারিত দামে চামড়ার দাম দিতে চান না ব্যবসায়ীরা।
এবার দাম প্রতি পিস। ব্যবসায়ীরা চামড়ার সঠিক মূল্য নির্ধারণ করলে আশা করি একটি চামড়াও নষ্ট হবে না।
গত ৩ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি বর্গফুট ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। ঢাকার বাইরে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। ঢাকার বাইরে প্রতি পিস গরুর চামড়ার সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার টাকা।
সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশের সবচেয়ে বড় চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ হয় সাভারের বিসিক লেদার ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনে। এখানে প্রায় 142টি ট্যানারি রয়েছে। এর ধারণক্ষমতা 25 হাজার কিউবিক মিটার। কিন্তু কোরবানির সময় তা বেড়ে হয় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার ঘনমিটার। এত চাপ এড়াতে জেলায় সাত দিন থেকে তিন মাস চামড়া সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ঢাকায় চামড়া পাঠানো বন্ধে জেলা পর্যায়ে প্রশাসনের কী পদক্ষেপ রয়েছে জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা চামড়া ব্যবসায়ী, সংরক্ষক, লবণ ব্যবসায়ীদের নিয়ে প্রস্তুতিমূলক বৈঠক করেছি। ব্যবসায়ীদের পর্যাপ্ত লবণ সরবরাহ। তারা নিজেরাই ত্বক বাঁচাবে। কয়েক সপ্তাহ চামড়া ঢাকায় নেবে না ব্যবসায়ীরা। আমাদের জেলায় 150টি এতিমখানা এবং চামড়া সংগ্রহকারী রয়েছে বলে জানা গেছে। আমরা বিনামূল্যে কিছু লবণও দিয়েছিলাম। যাতে তারা কিছু সময়ের জন্য ত্বককে বাঁচাতে পারে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৫টি বড় এতিমখানায় বিনামূল্যে লবণ দিয়েছি।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক ও সিইটিপির ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য শাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, “এ বছর আমরা গরু, ছাগল ও মহিষ থেকে 1 কোটি থেকে 1 কোটি পিস চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। এ বছর লবণের দামও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যারা সঠিক নিয়ম অনুযায়ী চামড়া সংরক্ষণ করবেন তারা চামড়ার ন্যায্য মূল্য পাবেন। এ ছাড়া চামড়া শিল্প নগরীতে সিইটিপির অবস্থা আগের চেয়ে ভালো।
বিসিআইসির পক্ষ থেকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, যানজট থেকে মুক্তিসহ অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিআইসি) সভাপতি সঞ্জয় কুমার ভৌমিক বলেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আমরা বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দিয়েছি। আমি তার সাথে আলাদাভাবে দেখা করেছি। ঈদের সাত দিনের মধ্যে ঢাকা জেলা পর্যায়ে চামড়া যাতে পৌঁছাতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
The post চামড়ার বিশৃঙ্খলা রোধে ব্যাপক প্রস্তুতি প্রথম প্রকাশিত হয়েছে বংদুনিয়া – ব্রেকিং নিউজ।