ট্রেন চালানোর জন্য ইঞ্জিন কোচের সংকটে পড়েছে রেল। কিন্তু নতুন কোচ কেনার প্রকল্প হাতে নিতে পারছে না সরকার। চার বছর আগে শুরু হওয়া পুরোনো 100টি যাত্রীবাহী মিটারগেজ কোচ মেরামতের প্রকল্প এখনও শেষ হয়নি। এর ফলে ট্রেনের বহরে কোচ যোগ করার জন্য দীর্ঘ অপেক্ষার সময় লাগে।

এমন পরিস্থিতিতে আগামী রোববার প্রজেক্ট স্টিয়ারিং কমিটির (পিএসসি) সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
প্রজেক্ট স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে চলমান কোচ মেরামত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হলেও রেলপথ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একমত হয়নি। তারা চলতি সময়ের মধ্যে অর্থাৎ আগামী জুনের মধ্যে এই প্রকল্প শেষ করতে বলছে। যাত্রী কোচের প্রাপ্যতা এবং কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য সরকার 1 জুলাই, 2020-এ 100টি কোচের একটি সংস্কার প্রকল্প চালু করেছে।

এই কাজটি 5 এপ্রিল 2023-এ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা না হলে সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে এবং ৩০ জুন নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্প সূত্র জানায়, নির্ধারিত ১০০ যাত্রীবাহী ট্রেনের মধ্যে ৮৯টির পুনর্বাসন কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ১১টি কোচের মেরামতের কাজ চলছে।

11টি কোচের মধ্যে পাঁচটিকে পাওয়ার কারে রূপান্তর করার জন্য পুনর্বাসন করা হচ্ছে। কিন্তু বিদেশ থেকে ইঞ্জিন জেনারেটর সেট কেনা সম্ভব না হওয়ায় তাদের পুনর্বাসন সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না। সূত্র জানায়, এ কারণে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে।
প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সংস্কার কাজের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক জিনিস আমদানি করা যায় না। এলসি খুলেও কাজ হয়নি।

এখনো বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা সম্ভব না হলেও বিলম্বে রেল মন্ত্রণালয় ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াতে অনীহা দেখাচ্ছে। মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, নির্ধারিত সময়ের ৯ মাস অতিবাহিত হলেও ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া খুবই দুঃখজনক।

অসন্তোষ প্রকাশ করে রেলওয়ের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, পাওয়ার কার ইঞ্জিন কেনার ক্ষেত্রে ক্রয় প্রক্রিয়ায় বিলম্বের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপক কখন রিকুইজিশন দিয়েছেন, কখন টেন্ডার জারি করেছেন এবং কোনও গাফিলতি আছে কিনা, কোনও কাজে কোনও বিলম্ব হয়েছে কিনা ইত্যাদি বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

এদিকে, গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত পিএসসির সভায় পাওয়ার কার ইঞ্জিন আমদানি সংক্রান্ত দরপত্র প্রক্রিয়ায় বিলম্বের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ বিষয়ে এখনো কোনো অগ্রগতি হয়নি।
সচিব, রেলপথ মন্ত্রণালয়। মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘প্রকল্পের মেয়াদ কোনোভাবেই বাড়ানো যাবে না। আগামী জুনের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে।

সভার কার্যবিবরণীতে কাজের অগ্রগতি প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া উল্লেখ করেন, সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (আরডিপিপি) অন্তর্ভুক্ত ১১৭টি প্যাকেজের মধ্যে ৯৩টি প্যাকেজের উপকরণ সংগ্রহ করা হয়েছে। বাকি 24টি প্যাকেজের মধ্যে 18টি প্যাকেজের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

যান্ত্রিক যন্ত্রপাতি এবং বিভিন্ন আকারের ‘শীট ব্লক’ সরবরাহ না হওয়ায় ট্রেনটির পুনর্বাসন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বৈদ্যুতিক সামগ্রী, বিশেষ করে ইঞ্জিন-জেনারেটর সেট এবং সিলিং ফ্যান যথাসময়ে না পাওয়ায় কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। সিলিং ফ্যান ভারতীয়। সেগুলো আর সেখানে তৈরি হয় না। অর্ডার দিয়ে আনতে হবে। আদেশ স্থাপন. এই মাসে সরবরাহ পাওয়া যাবে। প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ছাদে পাখা সংযোজন ছাড়াও ১৪টি কোচের অন্য সব কাজ শেষ হয়েছে।

প্রকল্পের অগ্রগতি প্রতিবেদনের ডেটা দেখায় যে 2020-21 অর্থবছরে কোনও বস্তুগত অগ্রগতি হয়নি। 2021-22 অর্থ বছরে 40টি বগি নির্মাণ করা হয়েছে। 2022-23 অর্থবছরে 30টি সম্পন্ন হয়েছে এবং চলতি অর্থবছরে এ পর্যন্ত 19টি সম্পন্ন হয়েছে।

Nitya Sundar Jana is one of the Co-Founder and Writer at BongDunia. He has worked with mainstream media for the last 5 years. He has a degree of B.A from the West Bengal State University.

Leave A Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.