থমথমপুর – এন.কে.মণ্ডল (পঞ্চম পর্ব)
এন.কে.মণ্ডলের পরিচিতিঃ- কবি এন.কে.মণ্ডল একজন ভারতীয় বাঙ্গালী কবি ও লেখক। তিনি পশ্চিম্বঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার প্রতাপপুর গ্রামে ৫ ই মে ১৯৯৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি রুকুনপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এইচ এস সি পাশ করেন। স্থানীয় হাজী এ.কে. খান কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন /
– না কেন? আমি কি তোমায় জিজ্ঞেস করতে পারি না।
– হ্যাঁ সে পারো। ওসব কথা বাদ দাও। ফোন কিসের জন্য দিয়েছো সেটা বল।
– না, এমনি নাম্বারটা দিলে তাই একটিবার ট্রাই করে দেখলাম।
– ওহ, ওহ । তা কি করছ এখন ? বন্ধুরা সব ঘুমিয়া গেছে নাকি?
– তা জানিনা তারা আপন আপন রুমে কি করছে?
স্বপ্না বলল, আমি একটি কথা জিজ্ঞেস করব?
– হ্যাঁ কর।
– বলছি , আমাকে কি সত্যি ভালোবাসো ? না এড়িয়ে যেতে চাও।
– কি যে বল ? আমি তো প্রথম দেখাতেই তোমায় ভালোবাসে ফেলেছি।
-ওহ তাই নাকি।
-হ্যাঁ ম্যাডাম হ্যাঁ।
-ভালোবাসো তো আমার সঙ্গে কোনো কথা বলছ না এবং এড়িয়ে যাচ্ছো মনে হচ্ছে।আমি ওসব জানি না।আমায় আগামীকাল পার্কে একটু পার্সনাল সময় দিতে হবে কিছু কথা বলতে চাই।
-ও তখন কিভাবে হবে আমরা একসঙ্গে থাকব তো।
-আমি ওসব জানি না একটু সময় বার করতেই হবে বুঝেছো।
-ঠিক আছে চেস্টা করব। এখন ঘুমোতে যাব কালকে দেখা হচ্ছে।
-ঠিক আছে সোনা।
-ঠিক আছে গুড নাইট।
-ঠিক আছে শুভ রাত্রি।
পরের দিন সকালে কফি নাস্তা খাওয়ার পর একটু বাড়ির ফুলবাগানে পায়চারি করে দারোয়ানকে বলল, সিংজী সিংজী, ড্রাইভার কে বলুন আমরা বেড়াতে যাব।
-সাহেব, এত সকালে যাবেন ? সকালে তো ভালো লাগবে না।
-কেন?
-সকালে তো আমাদের এখানে কেউ বেড়ায় না, সব বিকেলে।
-ওহ তাই।আমরা সকালেই যাব। আপনি ড্রাইভার কে বলুন।
-ঠিক আছে সাহেব বলছি।
-হ্যাঁ, একটু তাড়াতাড়ি যাও।
সন্তু, রিয়া, নয়না ও সুমনও রেডি হয়ে গেছে শুধুমাত্র গাড়ির অপেক্ষায় আছে। অনেক্ক্ষণ পরে গাড়ি আসল। রিয়া বলল, কি ব্যাপার রে ? এখানে কি কর্মচারিদের কোনো নিয়ম নেই নাকি? এতো লেট?
ড্রাইভার জবাব দেয়, দিদিমণি সব আছে । আমার আজ একটা জরুরি কাজ ছিল, তাই ওটা সেরে আসলাম । আর ভাবলাম সাহেবরা তো বেড়াতেই যাবে, না হয় এক্টটু লেট হবে।
-ওহ এই কথা, ঠিক আছ, চলুন।
-আপনার সিটবেল্ট লাগিয়ে নিন।
গাড়ি স্টার্ট করে প্রথমে পৌছালাম দিগন্ত পার্ক। সেখানে নানান পশুপাখিতে ভরপুর।এখানে কেবলমাত্র পশুপাখি ছাড়া কিছু দেখার নেই। তবুও অনেক সুন্দর পরিবেশ কত পর্যটক এসেছে। দেখতে দেখতে কয়েকটি সেলফি তুললাম ডি সি এলার দিয়ে। সুন্দর হয়েছে ফটোগুলি। ঘুরতে ঘুরতে দেখি রিয়ার সঙ্গে কে যেন কথা বলছে। হাটতে হাটতে গেলাম। কিরে, কি ব্যাপার রিয়া? এটা কে?
-ওহ তুই? এ হলো আমার পিসির দাদার ছেলে। আমি জানতাম না যে এখানে এসেছে । হঠাৎ দেখা হয়ে গেলো তাই কথা বলছি।
-ওহ আমি ফাহিম এখানে বেড়াতে এসেছি।এখানে আমার মাসির বাড়ি।
-ওহ ঠিক আছে আমি যাই।
-আরে ভাই অন্তত তোমার সেল্ফ নাম্বারটা তো দিয়ে যাও, ফ্রেন্ডশিপ করা যাবে।
-রিয়ার কাছে আছে নিয়ে নেবে।
চলে যাওয়ার পর বলে, কি ব্যাপার ? এসব কি দেখছি। তুইও দেখছি ডুবে ডুবে জল খেতে কম পারিস না।
-ধুর কি যে বলিস। চল দেখার অনেক বাকি আছে।
-চল তাহলে।
আজ সকালে স্বপ্না আসেনি। সবাই ঘুরে ফিরে দেখে নানান জিনিস। রেস্টুরেন্টে গিয়ে সবাই খাই। এরপর তাঁরা বাড়ির দিকে এগোতে থাকে। কিছুক্ষণ পরে গেলো বাড়ি ফিরল। মাসি খাওয়ার জন্য ডাক দেয় । তখন আবার স্বপ্না আসে। আর বলে চল কোথাও বেড়িয়ে আসি। নয়না উত্তর দেয়, সে কাজ সম্পুর্ন হয়ে গেছে ম্যাডাম।বেড়িয়ে এসেছি।
-ওহ তা বেশ ভালো করেছো আমাকে বাদ দিয়েই চলে গিয়েছো। এই বলে স্বপ্না রাগ করে চলে যায়।
পরে ফাহিম তারজন্য মাফ চেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বউ বা লাভার রাগ করলে নিয়ন্ত্রণ করা খুব দুস্কর হয়ে পড়ে।সেদিক থেকে ফাহিম খুব তাড়াতাড়ি রাগ ভাঙ্গাতে পারে।তাইই হল একমহুর্তের মধ্যে সব বরফ গলে জল হয়ে গেছে।শেষে ফাহিম আলতো করে গালে ছোট্ট কিস করে ভালোবাসার মর্যাদা দেয় এবং ভালোবাসা শুরু করে। স্বপ্না তো খুশিতে ডগমগ করে সেও পাল্টা কিস দিয়ে বুঝিয়ে দেয় যে সেও ফাহিমকে অনেক অনেক ভালোবাসে। আর তারজন্যই তাড়াতাড়ি রাগ কমিয়ে নিজেকে নিয়ন্ত্রনে আনে।
যাইহোক এখন সবকিছু মিটমাট আর কোনো ঝামেলা নেই।বিকেলে একসঙ্গে ঘুরতে যাবে থমথমপুরের মর্ডান ফিল্ম হল।সেখানে দুইশো টাকা টিকিট বা এন্ট্রি ফ্রী। সেখানে সিনেমা দেখে বের হল। তখন প্রায় সঁন্ধা সাড়ে পাঁচটা বেজে গিয়েছে।তখন রিয়াকে ডেকে বলে, শোন তোরা অন্যদিকে ঘুরে ঘুরে দেখ। আমি আর স্বপ্না একটু আলাদা নিরিবিলি জায়গায় বসি । আর তাছাড়া সবই তো বুঝতে পারছিস, তাই না?
-ঠিক আছে তোরা এনজয় কর।
ফাহিম বলল, তাহলে চল কোথায় নিরিবিলি জায়গায় যাওয়া যাক, নাকি?