বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ করোনা ভাইরাস মানব জাতিকে সঙ্কটের মুখে ঠেলে দিয়েছে বলে জাতির উদ্দেশ্য ভাষণ দেবার সময় জানিয়েছেন প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । কিন্তু জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবার সময় নরেন্দ্র মোদী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ভারতের সব নাগরিককে ২২শে মার্চ ১৪ ঘণ্টার জন্য গৃহবন্দী থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এবং এর নাম দিয়েছেন ‘জনতা কারফিউ’। এই নিয়ে বিরোধী পক্ষের অনেকেই সমালোচনা শুরু করেছেন । কিন্তু ‘জনতা কারফিউ’ কি এবং কেনই বা হঠাৎ করে দেশের প্রধান মন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে ১৪ ঘণ্টার জন্য “জনতা কারফিউ’ করার আবেদন জানালেন !
বিরোধী দলের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন শুধু রবিবার ১৪ ঘণ্টার ‘জনতা কার্ফু’ করে সত্যিই কি খুব লাভ হবে? যদি সকলকে বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যে আটকে থাকার আহ্বান জানানোই উদ্দেশ্য হয়, তা হলে ওই দিনই বিকেল পাঁচটায় বাড়ির দরজা-বারান্দা-ব্যালকনিতে পাঁচ মিনিটের জন্য এসে হাততালি দিতে কিংবা ঢোল-ঘণ্টা বাজাতে বলার অর্থ কী? এমনকি রাজ্যসভায় তৃণমূলের নেতা সুখেন্দুশেখর রায় কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা নাটুকে। তিনি চাইছেন রবিবার যেন সমস্ত নাগরিক হাততালি দেয়, গান গায়, ঢোল বাজায়। ইটালীয়দের অনুকরণ। কী নিষ্ঠুর রসিকতা!’’
আসুন এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক ‘জনতা কারফিউ’ এর গুরুত্ব ঠিক কোথায় !
জানানো হয়েছে ২২ শে মার্চ রবিবার জনতা কারফিউ, সকাল ৭ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত । এখন প্রথম প্রশ্ন হল কেন ২২ শে মার্চ দিনটি ‘জনতা কারফিউ’-এর জন্য স্থির করা হল ? সরকারী হিসাব অনুযায়ী 21 ই মার্চ মধ্যরাত থেকে ভারতে সমস্ত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অবতরণ স্থগিত করা হবে, এবং কোনও নতুন ব্যক্তি সম্ভবত করোনাভাইরাস উপসর্গ বহনকারী ভারতে প্রবেশ করবে না।
দ্বিতীয় প্রশ্ন, এই সময়টা সকাল সকাল ৭ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত কেন ?
সকাল ৭ টা থেকে রাত ৯ টা, এই ১৪-ঘন্টা স্বেচ্ছা সামাজিক দুরত্বের পিছনেও কারন রয়েছে । জানা গেছে কঠিন ও তরলে করোনাভাইরাসটির গড় জীবনকাল ১২ ঘন্টা । ভারতে ‘জনতা কারফিউ’ এর এই ১৪-ঘন্টা স্বেচ্ছা সামাজিক দুরত্বের মাধ্যমে সক্রিয় ভাবে করোনাভাইরাসের জীবনচক্রকে ছিন্ন করা যাবে ভয়ঙ্কর ভাবে ছড়িয়ে পড়া থেকে। তাত্ত্বিকভাবে একে বলা হয় ‘বক্রতল সরলিকরণ’ এবং এটা মহামারী ভাইরাস আটকানোর সর্বোত্তম উপায়।
সুতরাং করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে আসুন আমরা সকলেই আমাদের জীবনের একদিনের জন্য এই স্ব-বিচ্ছিন্নতা তথা ‘জনতা কারফিউ’ মেনে চলি । জীবনে একটা দিন ঘরের মধ্যে বন্ধী থাকলে হয়ত খুব বেশী ক্ষতি হবে না, অনেক সময় অসুস্থ হয়েও তো দিনের পর দিন ঘর বন্ধী থাকতে হয়, কিন্তু এই একটা দিন যদি করোনা সংক্রমণ মোকাবিলার জন্য ব্যয় করি তাহলে হয়ত অনেকের প্রান বেচে যাবে । প্রতিহত করা যাবে হয়ত মহামারীকে !
আমাদের সংবাদ মাধ্যম থেকে লক্ষ লক্ষ পাঠকের কাছে আবেদন, রাজনৈতিক ভেদাভেদ দূরে সরিয়ে রেখে, কিম্বা আমাদের সমালোচনার মুখ একটি দিনের জন্য বন্ধ রেখে আসুন আমরা একটা দিনের জন্য ‘জনতা কারফিউ’কে সফল করি । পাশাপাশি গোটা বিশ্বকে দেখাই কীভাবে ভারত করোনাকে প্রতিহত করছে !