বং দুনিয়া ওয়েব ডেস্কঃ অ্যামাজনের দাবানলের ক্ষত শুখাতে না শুখাতেই আবার শুরু হয়ে গেল আর এক ভয়ঙ্কর দাবানল । সেই দাবানলের রোষে পড়ে গৃহ ছাড়া হতে হয়েছে এক লাখেরও বেশী মানুষের । লাগাম ছাড়া দাবানলের আগুনে প্রায় ধ্বংসের মুখে দাড়িয়ে আছে গোটা ক্যালিফোর্নিয়া । বিপদ এড়াবার জন্য বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে । আপদ কালীন জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছে সরকার ।
দাবানলের গ্রাসে ধ্বংস হতে চলেছে ক্যালিফোর্নিয়া । হু হু করে ছড়াচ্ছে দাবানলের আগুন । হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে পরিস্থিতি। আগুনের লেলিহান শিখা আর কালো ধোঁয়ায় আরও বেশি করে ছেয়ে গেছে ক্যালিফোর্নিয়ার আকাশ। এই অবস্থায় সান ফ্রান্সিসকোর উত্তরে উইন্ডসোর ও হেল্ডসবার্গ শহর থেকে র বাসিন্দাকে দ্রুত সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সেখানকার প্রশাসন ।
দাবানলের আগুন যাতে আরও বেশী মাত্রায় ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেই কারনে বিপদ এড়াতে বিদ্যুৎ সংযোগ ও গ্যাসের লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হল ক্যালিফোর্নিয়ায়। এই মুহুতে প্রায় ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষ অন্ধকারে ডুবে গিয়েছেন । আগুন থেকে বাঁচতে উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় ইতিমধ্যেই ঘর ছাড়তে হয়েছে প্রায় এক লক্ষ মানুষকে ।
ক্যালিফোর্নিয়ায় গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা ‘প্যাসিফিক গ্যাস অ্যান্ড ইলেকট্রিক’ জানিয়েছে, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে প্রায় ১০ লক্ষ পরিবার । ৩৬টি প্রদেশের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানেও বিপর্যয় নেমে আসতে পারে ।
উল্লখ্য, এর আগে ক্যালিফোর্নিয়ার ইতিহাসে এমন বিপর্যয় আগে ঘতেনি । বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কারনে, দাবানল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের এই বিশাল মাপের অসুবিধা নিয়েও সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে সেখানকার প্রশাসনকে । হাজার হাজার মানুষের নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করাটাও সরকারের বিশাল বড় একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
এই মুহূর্তে, সেখানে বিদ্যুৎ এবং মোবাইল পরিষেবা বন্ধ থাকায়, না চলছে টেলিভিশন, না পাচ্ছে মোবাইল সেবা । ফলে বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই বললেই চলে । এই অবস্থায় পরিস্থিতি ঠিক কতটা খারাপ, কোন দিকটা নিরাপদ, কিছুই জানা সম্ভব হচ্ছে না স্থানীয় বাসিন্দাদের । ফলে আগে থেকে তেমন প্রস্তুতিও নিতে পারছেন না অনেকেই। হঠাৎই একদম কাছে আগুন চলে আসতে দেখে বিনা প্রস্তুতিতে পালাতে হচ্ছে বহু মানুষকে । সবচেয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বয়স্ক মানুষ ও শিশুদের ।
প্রশাসন থেকে আগুন নেভানোর জন্য কয়েক হাজার সরকারি কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে । তারা আপ্রানভাবে দিন-রাত এক করে কাজ করে চলেছেন । পাশাপাশি চলছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ । কিন্তু প্রতি ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে তীব্র বাতাসের কারনে ছড়িয়ে পড়া দাবানল কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না । লস অ্যাঞ্জেলেস ও সোনোমা কাউন্টিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছে স্থানীয় সরকার।
আগুনের তিব্রতায় সান ফ্রান্সিসকো বে এলাকার তাপমাত্রা প্রায় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। মেক্সিকোর বাহা ক্যালিফোর্নিয়া স্টেটে ইতিমধ্যেই ৩ জন মারা গিয়েছেন আগুনে। এখনও পর্যন্ত ধ্বংস হয়েছে দেড়শোটিরও বেশি বাড়ি। ক্যালিফোর্নিয়ার বিশাল বনভূমিও আগুনের গ্রাসে।
কিভাবে এই ভয়ঙ্কর দাবানল লাগল সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে । তবে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, একটি বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনা থেকে সূত্রপাত হয় আগুলের । যার জেরে ছড়িয়ে পড়ে দাবানল।