পবিত্র ঈদুল আজহায় সারাদেশে মোট ১ কোটি ৬ লাখ ২১ হাজার ২২৮টি গবাদিপশু বিক্রি হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ১১ লাখ ৭৮ হাজার ২২৮ টাকা বেশি। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবার মোট পশু মজুদ ছিল ১ কোটি ২৯ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭টি। এ হিসাবে অবিক্রিত রয়ে গেছে ২৩ লাখ ৫৯ হাজার ১৩৯টি পশু।
সোমবার (১৭ জুন) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সবচেয়ে বেশি পশু বিক্রি হয়েছে ঢাকা বিভাগে এবং সবচেয়ে কম ময়মনসিংহ বিভাগে। এ বছর ঢাকায় ২৫ লাখ ২০ হাজার, চট্টগ্রামে ১৯ লাখ ৭৪ হাজার ও রাজশাহীতে ২৩ লাখ পশু বিক্রি হয়েছে। গত বছর কোরবানি ঈদে বিক্রি হয়েছিল ৯৪ লাখ ৪৩ হাজারের বেশি পশু।
এবার কোরবানির হাটে ছোট ও মাঝারি মানের গরুর চাহিদা ছিল চরমে। যারা গরু বিক্রি করতে পারেনি তারা উল্টো ঢাকায় এসে কয়েক লাখ টাকা খরচ করে বলে মন্তব্য করেছেন খামারিরা। এখন আপনাকে গরুর যত্ন নিতে হবে। কারণ আগের ব্যাংক ঋণ পরিশোধ না করলে নতুন ঋণ পাওয়া যাবে না। অন্যদিকে গরুর খাবারের দাম বেশি।
এতে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বিশেষ করে বাজারে আনা বড় গরু বেশির ভাগই অবিক্রীত। তারা সমস্যায় পড়েছেন। দামি খাবার খেয়ে এবং ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কৃষিকাজ করা অনেকের অবস্থাও করুণ। এখন তাদের জন্য খামার পরিচালনার দৈনন্দিন খরচ মেটানো কঠিন হয়ে পড়বে। ভারত-মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে গরু আসায় এ সংকট দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইমরান হুসাইন বলেন, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে দেশের সব খামারি ও খামারিরা সামান্য লাভের আশায় সারা বছর পশু পালন করেন। কিন্তু ভারত ও মায়ানমার থেকে অবৈধভাবে গবাদিপশু আসায় তাদের আশা ভেস্তে গেছে।
সাদিক এগ্রোর নেতা ইমরান হুসাইন বলেন, প্রান্তিক খামারিরা মূলত ছোট গরু উৎপাদন করেন। আমাদের দেশে কোরবানির ঈদে গরুর চাহিদার ৪৫ শতাংশই হয়ে থাকে। বাকি গরু সারা বছরই বিক্রি হয়। সারা বছরই মাংসের দোকানে গরু জবাই করা হয়। এগুলি কখনই বড় খামার নয়। বড় কৃষকদের খরচ বেশি। ফলে ছোট গরু বড় উদ্যোগ উৎপাদন করতে পারে না। একজন প্রান্তিক কৃষক তার নিজের বাড়িতে গরু পালন করেন। এতে খুব বেশি খরচ হয় না।
তিনি আরও বলেন, আমরা বড় গরু বিক্রি করতে হিমশিম খাচ্ছি। বাংলাদেশে কোরবানির পশুর ৯৮ শতাংশই ছোট গরু। প্রান্তিক খামারিরা ছোট গবাদি পশুর প্রধান উৎপাদক। ফলে এ এলাকা প্রান্তিক কৃষকদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দেশি গরুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, যা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো পূরণ করতে পারে না। তাই এবারের ঈদে আমাদের মতো করপোরেট প্রতিষ্ঠানের বড় ক্ষতি হয়েছে।