আর এর মধ্যে ৮৫ শতাংশ এসেছে গত ছয় বছরে। 2019-20 এর তুলনায় 2022-23 সালে দেশের ঋণ মওকুফ দ্বিগুণ হয়েছে। অন্য কথায়, ২০১৩ সালে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বা বিআরআই (ওয়ান রিজিয়ন, ওয়ান রোড) চালু হওয়ার পর থেকে এটি বড় আকারে ঋণ দেওয়া শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় ২৭টি প্রকল্প চূড়ান্ত করা হয়।
চীন এসব প্রকল্পে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যার মধ্যে ১০ বিলিয়ন ডলারের একটি ঋণ চুক্তি ইতিমধ্যেই স্বাক্ষরিত হয়েছে। আর তিন বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি ঝুলে আছে। এবং গত 10 বছরে ছয় বিলিয়ন ডলারের বেশি ছাড় দেওয়া হয়েছে।
চীনের ঋণের বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান ২০২২ সালের মধ্যে চীন থেকে সবচেয়ে বেশি ২৬.৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছে। দেশটি বর্তমানে অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে। তখন অ্যাঙ্গোলা চীন থেকে ২১ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছিল। এরপরই রয়েছে শ্রীলঙ্কা। তার ঋণ ছিল $8.9 বিলিয়ন। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, তাদের পরে রয়েছে ইথিওপিয়া $6.8 বিলিয়ন, কেনিয়া $6.7 বিলিয়ন, জাম্বিয়া $6.1 বিলিয়ন এবং বাংলাদেশ $6.1 বিলিয়ন। এ ছাড়া লাওস, মিশর পাঁচ বিলিয়ন, নাইজেরিয়া, ইকুয়েডর, কম্বোডিয়া চার বিলিয়ন এবং অন্যান্য দেশ চীন থেকে তিন বিলিয়ন বা তার কম ঋণ নিয়েছে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক জানতে চাইলেন চীনা ঋণ বিপদে পড়েছে কি না। আহসান এইচ মনসুর গতকাল কণ্ঠকে বলেন, “আমরা কোথায় ঋণ ব্যবহার করছি এটা একটা বড় বিষয়। অত্যাবশ্যকীয় ও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রকল্প গ্রহণে কোনো সমস্যা নেই। অনেক সময় আমরা কম খরচের প্রকল্পে বেশি খরচ করে নিজেদের ফাঁদে ফেলি। তাহলে সমস্যা হবে। অতএব, আপনি যদি প্রকল্প নির্বাচনের বিষয়ে সতর্ক হন এবং কোনও ভুল প্রকল্প গ্রহণ না করেন তবে ঋণ নিতে সমস্যা নেই।
ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে বাংলাদেশের মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে $62.31 বিলিয়ন। এর মধ্যে চীনের শেয়ার ৫.৩৭ বিলিয়ন ডলার, যা মোট ঋণের ৮.৬২ শতাংশ। বাংলাদেশের ঋণের অবস্থানে চীনের অবস্থান চতুর্থ। চীনা সরকার সাধারণত দুই ধরনের ঋণ প্রদান করে, একটি হল মার্কিন ডলারে প্রেফারেন্সিয়াল বায়ার ক্রেডিট (PBC) এবং অন্যটি হল চীনের নিজস্ব মুদ্রায় সরকারী রেয়াত ক্রেডিট (GCL)।