প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত দেড় দশক ধরে বাংলাদেশে যে সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা, উন্নয়ন ও সুশাসন চলছে, তার ভিত্তি এই নতুন সম্পর্কের। বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার রক্ষায় সরকারের দায়িত্বশীল ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ পদক্ষেপে ফ্রান্স সরকার সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে এসেছেন ম্যাক্রোঁ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যকার পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ব্যাপী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। আমার পিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সূচনা করেছিলেন তা আজ নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে প্রেসিডেন্ট মাখোনের সঙ্গে আমার ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। চলমান ভূ-রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে ফ্রান্স বাংলাদেশের নীতিনির্ধারণী সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে এবং সমর্থন করে। আমরা উভয়েই আশা করি বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে এই নতুন কৌশলগত পদক্ষেপ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির অবিশ্বাস্য ও টেকসই অগ্রগতিতে ফরাসি সরকারের আস্থা দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করা হয়। এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রেখে ভিশন 2041 বাস্তবায়নে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। এ কারণে বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের পক্ষ থেকে আমি প্রেসিডেন্ট মাখোঁর নেতৃত্বে ফ্রান্স সরকার ও ফ্রান্সের জনগণকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে ফ্রান্স আমাদের অবকাঠামো উন্নয়নে অব্যাহত সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। উপরন্তু, তারা বাংলাদেশের কৌশলগত নিরাপত্তা অবকাঠামো নির্মাণে উন্নত এবং বিশেষায়িত প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানে তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভূ-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স অগ্রণী ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় ফ্রান্সের অগ্রণী ভূমিকাকে আমরা স্বাগত জানাই এবং এ লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর নেতৃত্বে একটি স্থায়ী তহবিল গঠনে ফ্রান্সের আহ্বানকে আমরা স্বাগত জানাই।’ একই সঙ্গে ফ্রান্সের সঙ্গে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ভাষা বিনিময় নিয়ে অর্থবহ আলোচনা হয়।