প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকারের লক্ষ্য দেশ, জনগণ ও প্রকৃতিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করা। বুধবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা-২০২৪’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পরিবেশ রক্ষায় বাসাবাড়ি, পাড়া-মহল্লা ও অফিসের ফাঁকা জায়গায় গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সুন্দর জীবন ও সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন সুন্দর পরিবেশ।’ তাই আমি চাই সবাই এ ব্যাপারে সচেতন হোন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে দেশ, জনগণ ও প্রকৃতিকে রক্ষা করাই আমাদের লক্ষ্য।
দেশবাসীকে গাছ লাগানোর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি এখানে ও বাইরের সবাইকে অনুরোধ করছি, যেখানে সম্ভব অন্তত তিনটি গাছ লাগাতে। একটি ফল, একটি বন এবং একটি ঔষধি গাছ। ফলের গাছ লাগালে ফল খেতে পারবেন আর বনের গাছ লাগালে তা বড় হলে বিক্রি করে টাকা পাবেন। এখন ভালো টাকা পাচ্ছে। এবং ঔষধি গাছ ঔষধ তৈরিতে বা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবাই যদি গাছ লাগায় তবে শুধু আমাদের বাড়ি-ঘর, কর্মক্ষেত্র, অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসায় নয়, যেখানে ফাঁকা জায়গা আছে সেখানেই গাছ লাগাতে হবে। গাছ লাগালে এমন গরমে গাছের নিচে বসলে খুব শীতল আর আরামদায়ক ছায়া পাওয়া যায়।
ছাদে বাগান করার পাশাপাশি গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজের হাতে গাছ লাগানোর আনন্দই আলাদা।’ তিনি আরও জানান, তার সংগঠন ‘৮৪-৮৫ সাল থেকে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চালিয়ে আসছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বৃক্ষরোপণ, বন সম্প্রসারণ ও বন সংরক্ষণে অবহেলার কারণে আগে দেশে বৃক্ষের আচ্ছাদনের পরিমাণ ছিল ১৭ শতাংশ, যা এখন প্রায় ২৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বিভিন্ন নার্সারিতে ১১ কেজি ২১ লাখ গাছের চারা বিক্রি ও বিতরণ, ২ লাখ ১৭ হাজার ৪০২ হেক্টর জমিতে ব্লক গার্ডেন নির্মাণ, ৩০ হাজার ২৫২ কিলোমিটার সরু বাগান নির্মাণের কাজ ইতিমধ্যেই তার সরকার করছে। তাছাড়া শুধু বনে বনায়নই নয়, তাদের সরকার যখনই রাস্তাঘাট বা স্থাপনা নির্মাণ করছে, তখন কতটি গাছ লাগাতে হবে তার সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যখন কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা থাকে, তাতে অবশ্যই আমাদের পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকে এবং যদি আমাদের দেশের কোথাও গাছ কাটা হয়, তাহলে আমরা যে পরিমাণ গাছ লাগাতে হবে তার চেয়ে তিনগুণ বেশি গাছ লাগানোর শর্ত অন্তর্ভুক্ত করি। আমরা করি। শেখ হাসিনা বলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের স্লোগান হওয়া উচিত ‘স্বাস্থ্যকর পরিবেশ স্মার্ট বাংলাদেশ’।
প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের মধ্যে রয়েছে ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য বঙ্গবন্ধু পুরস্কার’ (2023-2024), ‘জাতীয় পরিবেশ পদক’ (2023), ‘বৃক্ষরোপণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার’ (2022-2023) এবং ‘সামাজিক বনায়ন এওয়ার্ড’। ‘ (2023-2024) ‘পে ডিভিডেন্ড’ ফাংশন চেক।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষ মেলা-২০২৪’ উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবর হোসেন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার ও সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি দেখানো হয়।