প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল ছিলেন বহুমুখী প্রতিভা এবং তরুণদের জন্য আদর্শ। আজ (৫ আগস্ট) ‘শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৫তম জন্মবার্ষিকী’ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, শেখ কামাল যেমন দেশের সেরা ক্রীড়া সংগঠক ও ক্রীড়াবিদ ছিলেন, তেমনি ছাত্র হিসেবেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। সেনাবাহিনীতে ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত হওয়ার পর শিক্ষার ওপর জোর দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুনরায় যোগদান করেন।
তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি তিনি দেশীয় সংস্কৃতিকে হৃদয়ে লালন করেছেন এবং চর্চা করেছেন। খেলাধুলা, সঙ্গীত, অভিনয়, বিতর্ক, পাবলিক স্পিকিং ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার অনন্য স্থান ছিল। ‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’ প্রতিষ্ঠা করে তিনি সংস্কৃতি জগতে অমর হয়ে আছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপরিমেয় প্রাণশক্তিতে আশীর্বাদপ্রাপ্ত শেখ কামাল ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী, বিনয়ী, অকথ্য, নিষ্পাপ এবং সদালাপী। তিনি খুব সাধারণ হয়ে ওঠেন এবং সাধারণ মানুষের সাথে মিশে যান। তিনি যে কাউকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে একদল স্বাধীনতাবিরোধী খুনিরা। একই রাতে খুনিরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে প্রবেশ করে প্রথমে বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামালকে হত্যা করে। একদল কাপুরুষ ঘাতক শেখ কামালকে শারিরীকভাবে হত্যা করলেও তার পথ, আদর্শ ও দিকনির্দেশনা আজও বাংলাদেশের ক্রীড়া খাতকে আন্তর্জাতিক মানের উন্নীত করার যাত্রায় রোল মডেল।
শেখ হাসিনা বলেন, শেখ কামাল সবসময়ই আমাদের মধ্যে অনুপ্রেরণার উৎস ছিলেন এবং থাকবেন। আজ তাঁর 75তম জন্মবার্ষিকীতে, আমি গভীর মমতা ও স্নেহের সাথে তাঁকে স্মরণ করছি। আমি বিশ্বাস করি শেখ কামালের দৃষ্টান্ত ও প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করে আমাদের ক্রীড়া খাত শীঘ্রই আন্তর্জাতিক সাফল্যের শিখরে পৌঁছাবে।
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমা বেগম ফজিলতুন নেছার জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল বাংলাদেশের ক্রীড়া জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে আবির্ভূত হন। দেশ স্বাধীনের আগে তিনি আবাহনী সমাজকল্যাণ সংস্থা গঠন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রথম যুদ্ধ কোর্স’ সম্পন্ন করা অত্যন্ত চৌকস ক্যাডেট লেফটেন্যান্ট শেখ কামাল মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ থেকে ফিরে তিনি আবাহনী ক্রীড়া চক্র প্রতিষ্ঠা করেন। ফুটবল ছাড়াও তিনি আবাহনী ক্রীড়া চক্রের অধীনে হকি, ক্রিকেট ও টেবিল টেনিস দল গঠন করেন।
তিনি বলেন, শেখ কামাল খেলোয়াড়দের উৎসাহ দিতে আধুনিক পোশাক ও খেলার সরঞ্জাম দিতেন। তিনি খেলাধুলার প্রশিক্ষণ উন্নত করার জন্য একটি স্বাধীন দেশে প্রথম ব্রিটিশ কোচ নিয়োগ করেন। এক পর্যায়ে তিনি আবাহনী ক্রীড়া চক্রের একটি জেলা শাখা প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি খেলোয়াড়দের স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি অবসর ভাতা প্রদানের পদক্ষেপও নিয়েছেন। সেই লক্ষ্যে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা অনুদান নিয়ে ‘স্পোর্টসম্যান ওয়েলফেয়ার ফান্ড’ গঠন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের অবদানকে স্মরণ করতে এবং তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা ব্যক্তিদের ‘শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া’ পুরস্কার প্রদান করা হবে। খেলাধুলা করা হয়। কাউন্সিল অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ আজ। এই চমৎকার উদ্যোগের জন্য তিনি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানান। এছাড়াও তিনি পুরস্কার প্রাপ্ত সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অভিনন্দন জানান।