এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার পর কসাই জিহাদ ও তার সহযোগী সিয়াম তার শরীরের মাংস ও হাড় কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলে। এরপর জিহাদ তার কাছে রাখা একটি ছোট ওজনের মেশিনে কিছু মাংসের টুকরো ওজন করে। মাংসের প্রতিটি টুকরার ওজন 70 থেকে 100 গ্রাম। সোমবার রাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের গণমাধ্যম এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হলুদ মুখমণ্ডিত এমপি আনারের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো একটি ট্রলিতে রেখে নিউ টাউনের একটি পাবলিক টয়লেটে হস্তান্তর করা হয়েছে। খুনের প্রধান আসামি আমানুল্লাহ ওই পাবলিক টয়লেটে তার সহযোগী জিহাদ হাওলদারের কাছে ট্রলিটি তুলে দিয়েছিলেন। সোমবার বাংলাদেশের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জিহাদসহ ওই পাবলিক টয়লেটে হামলা চালায়।
এদিন জিহাদসহ পুলিশ ঘটনাস্থল ও নিউ টাউনের ফ্ল্যাটসহ ভান্ডার এলাকার বেশ কয়েকটি স্থান পরিদর্শন করে এবং আনোয়ারুল আজিম আন্না হত্যা ও তার শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পাচারের ঘটনা তদন্ত করে। গোয়েন্দারা বৃষ্টির মধ্যে সকালে জিহাদকে নিউ টাউনের একটি অভিজাত ফ্ল্যাটে নিয়ে যায়। জিহাদ ও তার সহযোগী সিয়াম আনারকে হত্যার পর তার শরীরের মাংস ও হাড় টুকরো টুকরো করে ফেলে। পেশায় একজন কসাই, জিহাদ মাংস কেটে তার কাছে থাকা একটি ছোট ওজনের মেশিনে কয়েক টুকরো মাংস ওজন করেন। মাংসের প্রতিটি টুকরার ওজন 70 থেকে 100 গ্রাম। আজিমের মাথা অর্ধেক কেটে টুকরো টুকরো করা হয়।
জিহাদ দাবি করেছে, অন্য দুই আসামি মুস্তাফিজুর ও ফয়জলের মাথার টুকরোগুলো আলাদা ট্রলিতে পুঁতে রাখা হয়েছে। তারা দুজনেই বনগাঁ সীমান্তের কাছে যশোর রোডে টুকরোগুলো ফেলে দেয়।
এদিন গোয়েন্দারা জিহাদকে নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে নিয়ে যান এবং পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করেন যেখানে আনারকে প্রথমে বালিশ দিয়ে হত্যা করা হয়, তারপর মেঝেতে জিহাদ ও সিয়াম প্লাস্টিক তৈরির জন্য তার শরীর কাটতে থাকে। ফ্ল্যাটে বসেই বাংলাদেশি গোয়েন্দা ভিডিও কল করে প্রধান আসামি আমানুল্লাহর কাছে ঘটনাস্থল সম্পর্কে জানতে চান। তিনি আমানুল্লাহ ও জিহাদের বক্তব্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এর পরে তিনি নিউ টাউনের একটি পাবলিক টয়লেটে যান। ১৩ মে হত্যাকাণ্ড ও লাশ টুকরো টুকরো করার পর আমানুল্লাহ জিহাদ ও সিয়ামের সঙ্গে একটি ট্রলিভর্তি দেহের অংশ নিয়ে বাসা থেকে বের হন। আমানুল্লাহ বাসা থেকে কিছু দূরে একটি পাবলিক টয়লেটে ট্রলিটি জিহাদের হাতে তুলে দিয়ে ফ্ল্যাটে ফিরে আসেন। ভান্ডারের কৃষ্ণমতি গ্রামের কাছে, পোলারহাটের বাগজোলা খালের কাছে, রাজারহাটের ভেড়ার চালার কাছে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো অন্য গাড়িতে ফেলে দেয় জিহাদ।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য পশ্চিমবঙ্গে গিয়েছিলেন সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার। সেখানে প্রথমে বরাহনগরে স্থানীয় বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে থাকেন। ১৩ মে তিনি গোপালের বাড়ি ছেড়ে নিউটাউনের একটি ফ্ল্যাটে চলে যান। ওই ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন আনোয়ারুল আজিমের বন্ধু আকতারুজ্জামান। সেখানে তাকে হত্যা করা হয়।